১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর এদেশে ভারত থেকে মোহাজেরদের আগমন ঘটে। এতে তৎকালীন প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকায় বস্তি সমস্যাসহ নানাবিধ সামাজিক সমস্যার উদ্ভব ঘটে। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘ থেকে প্রেরিত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সরকার ১৯৫৫ সালে Dhaka Urban Community Development Board গঠন করে। এ বোর্ডের কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকার কায়েতটুলিতে ১৯৫৫ সালেই পরীক্ষামূলকভাবে শহর সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প (Urban Community Development Project (UCDP) চালু করা হয়। একই সালে এ প্রকল্পের সফলতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের পাঁচশালা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ঢাকা শহরের গোপীবাগ, লালবাগ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় এ কার্যক্রমের সম্প্রসারণ করা হয়। ১৯৬০ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে এই প্রকল্পের অধীনে ১২ টিসহ মোট ১৬টি ইউনিটের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ১৯৬১ সালে সমাজকল্যাণ পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর এই প্রকল্পের ক্রমবর্ধমান সফলতা এবং প্রসার অব্যাহত থাকে। শহর এলাকায় বসবাসরত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চাহিদার প্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে জুন ১৯৯৬ পর্যন্ত এ কার্যক্রমকে ৪৩টি ইউনিটে উন্নীত করা হয়। ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে জুলাই ১৯৯৬ সালে ‘শহর সমাজসেবা কর্মসূচির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ-১ম পর্ব’ নামে উন্নয়ন খাতে আরও ৭টি শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়। এতে মোট ইউনিট সংখ্যা ৩৪টি জেলায় ৫০টিতে উন্নীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০২-২০০৫ অর্থ বছরে ‘শহর সমাজসেবা কর্মসূচির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ-২য় পর্ব’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দেশের অবশিষ্ট ৩০টি জেলায় ৩০টি ইউনিট স্থাপন করা হয়। বর্তমানে সকল সিটি করপোরেশন ও জেলা শহরসহ সর্বমোট ৮০ টি শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রমের রূপকল্প, অভিলক্ষ্য এবং লক্ষ্য অর্জনে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতাধীন একটি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতাভুক্ত এলাকার যুব সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নের জন্য তাদের দক্ষতা উন্নয়ন করা হবে। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে লক্ষ্য করা যায়, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী। প্রতিবছর প্রায় ২০ লক্ষ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এদেশের শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৬ লক্ষ তে পৌঁছবে। এ বিশাল মানব সম্পদকে দক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদফতর পিছিয়েপড়া, সমস্যাগ্রস্ত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কর্মদক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ও সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত পদ্ধতিতে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
সংজ্ঞা।–
উদ্দেশ্য ও প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হলে এ নীতিমালায়-
(ক) কর্তৃপক্ষ বলতে সমাজসেবা অধিদফতরকে বুঝাবে।
(খ) সরকার বলতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বুঝাবে।
(গ) মহাপরিচালক বলতে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালককে বুঝাবে।
(ঘ) শাখা বলতে সমাজসেবা অধিদফতরের শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম (UCD) শাখাকে বুঝাবে।
(ঙ) বোর্ড বলতে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডকে বুঝাবে।
(চ) কার্যালয় বলতে সমাজসেবা অধিদফতরের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট শহর সমাজসেবা কার্যালয়কে বুঝাবে।
(ছ) স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান বলতে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বুঝাবে।
(জ) নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ বলতে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও
নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ মোতাবেক সমাজসেবা অধিদফতরকে বুঝাবে।
(ঝ) সমন্বয় পরিষদ বলতে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর অধীন নিবন্ধিত সংশ্লিষ্ট শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতাধীন স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাকে বুঝাবে।
রূপকল্প (Vision)
শহর এলাকার নিম্ন আয়ভুক্ত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং যত্নশীল সমাজ প্রতিষ্ঠা।
অভিলক্ষ্য (Mission)
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে শহর এলাকার পিছিয়েপড়া ও সমস্যাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়ন ও জীবনমান উন্নয়ন।
লক্ষ্য (Goals)
(১) স্বেচ্ছাসেবক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকাণ্ডের সমন্বয় এবং নিবন্ধনে সহায়তাকরণ;
(২) বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজসেবামূলক উদ্যোগ উৎসাহিতকরণ;
(৩) পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন, নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ সুদৃঢ়করণ;
(৪) কর্মদলগঠনের মাধ্যমে সংগঠিতকরণ;
(৫) দলীয় সদস্যদের মধ্যে সঞ্চয়ী মনোভাব গড়ে তোলা এবং সঞ্চয় সৃষ্টির মাধ্যমে নিজস্ব তহবিল গঠন;
(৬) মা ও শিশুর যত্ন; প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা; আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা; নিরাপদ পানি ব্যবহার; স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার; সাক্ষরতা; পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা; পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদন; বাল্যবিবাহ, যৌতুকপ্রথা, নারী ও শিশু নির্যাতন-পাচার, ইভ-টিজিং ও এসিড সন্ত্রাস প্রতিরোধ; তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ; শিশুশ্রম রোধ; ধূমপান ও মাদকসেবন নিরুৎসাহিতকরণ; প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা, সুখী পরিবার গঠন ইত্যাদি সামাজিক কার্যক্রমে লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ;
(৭) সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণের লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে কারিগরি-বৃত্তিমূলক ও উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ প্রদান;
(৮) মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা;
(৯) শহর এলাকার ভিক্ষুক এবং হিজড়া এই দুইশ্রেণির জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে উৎপাদনমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন;
(১০) সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন;
(১1) সংশ্লিষ্ট এলাকার স্বার্থে অধিদফতর ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে দেশী ও বিদেশী দাতা সংস্থার সহায়তায় MoU ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ; এবং
(১২) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বাস্তবায়ন।
কৌশলগত উদ্দেশ্য (Strategic Objectives)
(১) সমন্বয়সাধন;
(২) সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি;
(৩) দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান; এবং
(৪) সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান।
সমন্বয় পরিষদ
সমন্বয় পরিষদের গঠন।–
(১) স্বেচ্ছাসেবক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকাণ্ডের সমন্বয়, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজসেবামূলক উদ্যোগ উৎসাহিতকরণ এবং মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি শহর সমাজসেবা কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর অধীন একটি সমন্বয় পরিষদ গঠিত হবে।
(২) উপঅনুচ্ছেদ ১ অনুসারে গঠিত সমন্বয় পরিষদ ‘সমন্বয় পরিষদ, শহর সমাজসেবা কার্যালয়,…’ নামে অভিহিত হবে।
(৩) উপঅনুচ্ছেদ ১ অনুসারে গঠিত সমন্বয় পরিষদ সংশ্লিষ্ট নিবন্ধীকরণ/নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে পরিচালিত হবে।
সমন্বয় পরিষদের কর্মপরিধি।–
(১) স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর তফসিলে বর্ণিত কার্যক্রমের সাথে সংগতিপূর্ণ কার্যক্রম সমন্বয় পরিষদের কর্মপরিধি হবে।
(২) সংশ্লিষ্ট নিবন্ধীকরণ/নিবন্ধকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে নীতিমালার আলোকে সমন্বয় পরিষদ যেকোনো আয়-বর্ধক কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারবে।
দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ
উদ্দেশ্য-
(১) টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকল্পে তরুণদের উপযুক্ত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যথোপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি;
(২) দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে উপযুক্ত পেশায় নিয়োজিত করার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ; এবং
(৩) তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম।–
শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম বাংলায়- ‘দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, ............’, এবং ইংরেজিতে ‘Skill Development Training Centre, Urban Social Services Office, ..........……’ হবে।
প্রশিক্ষণ ট্রেডসমূহ।–
(১) দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহে বাংলাদেশ কারিগরী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ট্রেড অনুযায়ী অনুরূপ নামকরণ ও সিলেবাস অনুসরণ করতে হবে;
ক্রম |
ট্রেড’এর নাম |
ট্রেড কোড |
---|---|---|
১ |
কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন |
৭৬ |
২ |
ইলেকট্রিকাল হাউজ ওয়্যারিং |
১৭ |
৩ |
হার্ডওয়্যার এন্ড নেটওয়ার্কিং |
৭৭ |
৪ |
রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ার-কন্ডিশনিং |
২৭ |
৫ |
ড্রেসমেকিং এন্ড টেইলারিং |
২৯ |
৬ |
সার্টিফিকেট-ইন-বিউটিফিকেশন |
৭২ |
৭ |
মোবাইলফোন সার্ভিসিং |
৩৫ |
৮ |
প্রফিসিয়েন্সী ইন ইংলিশ কমিউনিকেশন |
৯৭ |
9 |
গ্রাফিক্স ডিজাইন এন্ড মাল্টিমিডিয়া প্রোগ্রামিং |
৮১ |
10 |
ব্লক-বাটিক এন্ড প্রিন্টিং |
96 |
11 |
ডাটাবেজ প্রোগ্রামিং |
৭৯ |
12 |
ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট |
০২ |
13 |
রেডিও এন্ড টেলিভিশন সার্ভিসিং |
২৬ |
14 |
বাশঁ, বেত ও পাটি শিল্প |
৬৪ |
15 |
জেনারেল ইলেকট্রনিক্স |
৯৫ |
16 |
ড্রাইভিং কাম অটো মেকানিক্স |
৬৮ |
17 |
ট্রাভেল ট্যুরিজম এন্ড টিকেটিং |
৯১ |
18 |
এমব্রয়ডারি মেশিন অপারেটর অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স |
০৪ |
19 |
হর্টিকালচার |
৬০ |
20 |
আমিনশীপ |
৪৮ |
প্রশিক্ষণার্থীর যোগ্যতা।–
(১) প্রশিক্ষণ গ্রহণের যোগ্য ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী যে কোনো বাংলাদেশী নাগরিক (নারী/পুরুষ/হিজড়া) প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সুবিধাবঞ্চিত ও সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি এ প্রশিক্ষণ গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
(২) সরকারি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচিত সরকারি কর্মচারী এবং প্রকল্প বা কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবে;
(৩) প্রশিক্ষণ গ্রহণের ক্ষেত্রে একজন প্রশিক্ষণার্থীর নিম্নবর্ণিত যোগ্যতা থাকতে হবে, যথা:
(ক) ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং, সার্টিফিকেট-ইন-বিউটিফিকেশন, হর্টিকালচার ও ব্লক-বাটিক এন্ড প্রিন্টিং ট্রেড’এর জন্য শিক্ষাগতযোগ্যতা ন্যূনতম ৫ম শ্রেণি বা পিইসি বা সমমান উত্তীর্ণ।
(খ) অন্যান্য সকল ট্রেড’এর প্রশিক্ষণার্থীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি বা জেএসসি বা সমমান উর্ত্তীর্ণ।
প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি কমিটি।–
(১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি কমিটি গঠিত হবে, যথা:
(ক) সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা অফিসার, যিনি উক্ত কমিটির আহবায়ক হবেন;
(খ) উপপরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রতিনিধি 1 জন;
(গ) সভাপতি, সমন্বয় পরিষদ কর্তৃক মনোনীত সমন্বয় পরিষদের সদস্য 1 জন; এবং
(ঘ) সংশ্লিষ্ট ট্রেড’এর প্রধান প্রশিক্ষক, যিনি উক্ত কমিটির সদস্য-সচিব হবেন।
(২) উপঅনুচ্ছেদ ১ এ বর্ণিত কমিটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
(৩) কমিটির কর্মপরিধি নিম্নরূপ, যথা:
(ক) নীতিমালা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থী বাছাই ও ভর্তি নিশ্চিতকরণ;
(খ) প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান;
(গ) প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি ও বাছাই সংক্রান্ত উদ্ভুত সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; এবং
(ঘ) প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি ও বাছাই সংক্রান্ত বিষয়ে সমন্বয় পরিষদ বা নিবন্ধীকরণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যেকোনো দায়িত্ব পালন।
প্রার্থী বাছাই ও ভর্তি পদ্ধতি।–
প্রার্থী বাছাই ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, যথা:
(ক) কোনো নির্দিষ্ট ট্রেড’এ প্রশিক্ষণ কোর্স শুরুর অন্তত ১ (এক) মাস পূর্বে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে;
(খ) ক্ষেত্রমত, স্থানীয় পত্রিকা, সোস্যাল মিডিয়া, স্থানীয় ক্যাবল টিভি, পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার ইত্যাদির মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্যসহ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে;
(গ) প্রশিক্ষণ কোর্স’এ ভর্তির আবেদন করার জন্য একটি নির্ধারিত সময় থাকতে হবে;
(ঘ) যে কোনো ট্রেড বা কোর্স’এ ভর্তির জন্য আগ্রহীকে সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক নির্ধারিত ফরম ইউসিডি- এ ক্ষেত্রমত, সরাসরি বা অফলাইন বা অনলাইন’এ আবেদন করতে হবে; এবং
(ঙ) কোনো নির্দিষ্ট ট্রেড’এর ক্ষেত্রে আবেদনকারীর সংখ্যা উক্ত ট্রেড’এর অনুমোদিত আসন সংখ্যার চেয়ে বেশি হলে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থী বাছাই করতে হবে।
ভর্তি ফি।–
তবে শর্ত থাকে যে, আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সমন্বয় পরিষদ কোনো নির্বাচিত প্রার্থীর ভর্তি ফি হ্রাস করতে পারবে।
বোর্ড’এ প্রশিক্ষণার্থী নিবন্ধন ও মেয়াদ।–
(১) অনুচ্ছেদ ২০ অনুসারে রেজিস্ট্রেশন ফি ও কেন্দ্র ফি পরিশোধ করে বোর্ড’এর সিস্টেমে প্রবেশ করে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কর্তৃক নিবন্ধন প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করতে হবে;
(২) বোর্ড’এর তালিকাভুক্ত ট্রেড থেকে স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচিত ট্রেড অনুযায়ী বোর্ড’এর সিলেবাস বা কারিকুলাম বা মডিউল মোতাবেক ৩-৬ মাস মেয়াদি/৩৬০ ঘন্টার প্রশিক্ষণ কোর্স জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি-মার্চ, এপ্রিল-জুন, জুলাই-সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর-ডিসেম্বর সেশনে পরিচালিত হবে।
প্রশিক্ষণ সমাপ্তি ও সুবিধা।–
(২) প্রশিক্ষণ কোর্স সফলভাবে সমাপনকারী প্রশিক্ষণার্থী আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী বা উদ্যোক্তা হিসেবে আগ্রহী হলে সংশ্লিষ্ট জেলার আওতাধীন উপজেলা/শহর সমাজসেবা কার্যালয় পরিচালিত ঘূর্ণায়মান তহবিল থেকে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবে।
সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম
শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি (ইউসিডিপিআইসি)।–
শহর সমাজ উন্নয়ন (UCD) কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের জন্য ‘শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি’ (ইউসিডিপিআইসি) নামে একটি কমিটি থাকবে। কমিটির গঠন নিম্নরূপ :
শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি (ইউসিডিপিআইসি)
|
সভাপতি (পদাধিকার বলে) |
|
সদস্য |
|
সদস্য |
|
সদস্য |
|
সদস্য |
|
সদস্য |
|
সদস্য |
|
সদস্য |
|
সদস্য সচিব (পদাধিকার বলে) |
ন্যূনতম ৫ (পাঁচ) সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম পূর্ণ হবে।
লক্ষ্যভুক্ত পরিবার নির্বাচন পদ্ধতি।–
(ক) পারিবারিক বার্ষিক গড় আয়: ০-২,০০,০০০ টাকা -‘ক’ শ্রেণি (দরিদ্রতম)
(খ) পারিবারিক বার্ষিক গড় আয়: ২,০০,০০১-3,0০,০০০ টাকা -‘খ’ শ্রেণি (দরিদ্র)
(গ) পারিবারিক বার্ষিক গড় আয়: 3,0০,০০১ টাকা-তদুর্ধ্ব-‘গ’ শ্রেণি (সচ্ছল)।
‘ক’ ও ‘খ’ শ্রেণির পরিবার এ কার্যক্রমের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
আর্থ-সামাজিক স্কিম (ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম) বাস্তবায়ন।–
স্কিম অনুমোদন ও ঋণ বিতরণ।–
স্কিম অনুমোদন ও ঋণ বিতরণ।–
/